ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় কৃষি বিভাগের ভবন বরাদ্ধ কৃষি কর্মকর্তার নামে: স্বপরিবারে বসবাস করেন অফিসের গার্ড!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া

মো. আমিন উল্লাহ সিকদার। তিনি পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিসে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দীর্গদিন ধরে কর্মরত রয়েছে। আর তিনি বসবাসের জন্য বিগত ১০/১৫ বছর পূর্বে পেকুয়া বাজারে অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মালিকানাধীন একটি পরিত্যক্ত ভবন মাসিক ৫০টাকা ভাড়ায় বরাদ্দ গ্রহণ করেছিলেন। সে সুবাধে তিনি সরকারী ওই ভবনে প্রায় ১০ বছরের অধিক সময় পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করেছিলেন। গত ২ বছর পূর্বে তিনি পেকুয়া উপজেলা সদরে তার ক্রয়কৃত জমিতে পাকা বাড়ী করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করছেন। এরপরেও ওই ভবনের ইজারা তার নামে বহাল রয়েছে। দখলও ছাড়েননি সরকারী ওই ভবন।

 সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষি বিভাগের একতলা ওই ভবনে এখন বসবাস করছেন পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিসের গার্ড ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল্লাহ সিকদারের ভাগ্নিজামাই মো. এহেসান! তিনি তার ভাগ্মি জামাইকে সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন।

 খোঁজ নিয়ে গেছে, পেকুয়া কৃষি অফিসের গার্ড এহেসান ওই ভবনে স্ত্রী, পিতা, মাতা ও বোনদের নিয়ে বসবাস করছেন নিয়মানীতি উপেক্ষা করে। অথচ নিয়ম সরকারী নিয়ম হচ্ছে, সরকারী কর্মকর্তারা সরকারী যে কোন ভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনের ২৫% টাকা বেতন থেকে কেটে সরকারী কোষাগারে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সে নিয়ম ওই কর্মকর্তা আমিরুল্লাল সিকদার মানেননি।

 জানা গেছে, নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে আমিরুল্লাহ সিকদার ওই ভবনটি নামমাত্র মূল্যে ইজারা গ্রহণ করেছিলেন। ওই কর্মকর্তা বিগত ১০/১৫ বছর ভাড়া বাবদ লাখ লাখ টাকার সরকারী বাসা ভাড়া ফাঁকি দিয়েছেন। এখন নতুন করে ফাঁকি দেওয়ার কৌশলও অবলম্বন করেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আমিরুল্লাহ সিকদার কজ্বায় সরকারী ভবনটির ইজারা বহাল থাকায় সরকারী কোটি টাকা মূল্যমানের ভবন ও জায়গাটি বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরকারী ভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করে পেকুয়া কৃষি অফিসের গার্ড এহেসান সরকারী ভাড়ী ভাড়া ফাঁকি দিচ্ছেন।

 এ ব্যাপারে জানতে পেকুয়া কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল্লাহ সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, তিনি বর্তমানে পরিবার নিয়ে তার নিজস্ব বাসায় বসবাস করছেন জানিয়ে আর কথা বলতে রাজি হননি।

পেকুয়া কৃষি অফিসের গার্ড মো. এহেসানের সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বহুবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 এ বিষয়ে জানার জন্য পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এইচ, এম, মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পেকুয়া বাজারের কৃষি বিভাগের ওই একতলা ভবনটি একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নামে ইজারা রয়েছে। তবে ওই ভবনে বর্তমানে তার অফিসের গার্ড এহেসান পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন জানিয়ে আরো জানান, ভবনের ইজারা গ্রহীতা কৃষি কমকর্তার ভাগ্নিজামাই হওয়ার সুবাধে এহেসান সেখানে বসবাস করছেন।

পাঠকের মতামত: